ঢাকা, ০২ জুন -
দৈনিক ‘আমার দেশ’
পত্রিকার প্রকাশক হাসমত আলীর মামলার পরপরই বাতিল করা হয়েছে পত্রিকার
ডিক্লারেশন। মঙ্গলবার রাতে পত্রিকার প্রকাশনা (ডিক্লারেশন) বাতিলের আদেশ
জারি করে সরকার। এরআগে ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত
সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ওই পত্রিকার প্রকাশক হাসমত আলী
প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেছেন। আজ মঙ্গলবার রাতে শিল্প এলাকা তেজগাঁও
থানায় তিনি দণ্ডবিধির ৪১৯/৪২০/৫০০ ধারায় এ মামলাটি দায়ের করেছেন বলে
জানিয়েছে পুলিশ। অবশ্য এর আগে হাসমত আলীকে সোমবার একটি গোয়েন্দা
সংস্থার সদস্যরা বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় বলে তার পরিবার ও পত্রিকার পক্ষ
থেকে অভিযোগ করা হয়। বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘দৈনিক আমার দেশ’
পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ এবং নিজের গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন
পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। বলেন, ‘দৈনিক আমার
দেশ’ পত্রিকা বন্ধ করে আমাকে গ্রেপ্তার করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সোমবার
প্রকাশক হাসমত আলীকে এরই অংশ হিসেবে একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা বাসা
থেকে তুলে নিয়ে যায়।’ মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ২টা
পর্যন্ত হাসমত আলীকে গোয়েন্দা সংস্থার দপ্তরে বসিয়ে রেখে পরে তার কাছ থেকে
সাদা কাগজে দুটি স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।’ এদিকে মামলা হওয়ার পর
আমার দেশ পত্রিকার প্রেস সিলগালা করে দেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে
জানা গেছে। ফলে আগামীকাল বুধবার পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ থাকতে পারে এমন
গুজব থাকলেও পত্রিকার পক্ষ থেকে কোনো কিছুই বলা হয়নি। তবে
পত্রিকাটির ইউনিট চিফ বাছির জামাল স্বাক্ষরিত এক বার্তায় বলা হয়েছে,
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন
(ডিইউজে)-এর যৌথ উদ্যোগে আমার দেশ পত্রিকার ওপর সরকারি খড়গের প্রতিবাদে
আগামীকাল ২ জুন বুধবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে এক প্রতিবাদ
সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হবে বলে তাতে সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য
অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এক বছরেও
ঘরে ফেরা হয়নি আইলা বিধ্বস্ত ১০ হাজার মানুষের
বছর পেরিয়ে গেলেও আইলা দুর্গত সাতক্ষীরা জনপদের
১০ হাজার মানুষ এখনো ঘরে ফিরতে পারেনি। বাস্তুহারা দুটি উপজেলার তিন
ইউনিয়নের ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছে। বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন পয়েন্টের পাঁচটি ক্লোজার এখনো
নির্মাণ হয়নি। ফলে ঘরে ফিরেও পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছে ওই
দুই উপজেলার ১২টি গ্রামের আরো ২০ হাজার মানুষ। সাতক্ষীরার আইলা বিধ্বস্ত উপকূলীয় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,
এক বছর হয়ে গেলেও আইলার সৃষ্ট ক্ষত এখনো মুছতে পারেনি জেলার শ্যামনগর
উপজেলার গাবুরা ও পদ্মপুকুর ইউনিয়ন এবং আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের
চাকলা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। বেড়িবাঁধের
ক্লোজার নির্মাণ না হওয়ায় ঘরে ফিরতে না পারা মানুষ খোলা আকাশের নিচে
মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। গাবুরা ইউনিয়নের
চকবারা, জেলেখালী ও ৯ নম্বর সোরা এলাকায় বেড়িবাঁধের ৩টি ক্লোজার এখনো
নির্মাণ করা হয়নি। ফলে চকবারা, জেলেখালী, ৯ নম্বর সোরা ও মধ্যম খলিসাবুনিয়া
গ্রামে এখনো কপোতাক্ষ নদ ও খোলপেটুয়া নদীর জোয়ারের পানি অবাধে প্রবেশ
করছে। এসব গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের পানিবন্দি
অবস্থায় দুর্বিষহ জীবন কাটছে।
৩৮৫০০ কোটি
টাকার এডিপি অনুমোদন
আগামী অর্থবছরের জন্য ৩৮ হাজার ৫ শ’ কোটি টাকা
ব্যয়ে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাৎসরিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন
করেছে সরকার। বাজেটের দুই সপ্তাহ
আগে আগামী অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের এ অনুমোদন দেয়া হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয়
অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে আজ মঙ্গলবার এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল
(অব.) একে খন্দকার সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন। তিনি জানান, এডিপির মোট ব্যয়ের ৬০ ভাগ অর্থ্যাৎ ২৩ হাজার
২শ’ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে আর বাকি ৪০ ভাগ অর্থ্যাৎ ১৫ হাজার
৩ শ’ কোটি আসবে বিদেশি সাহায্য থেকে। আগামী এডিপিতে মোট প্রকল্পের সংখ্যা হবে ৯১০টি যার মধ্যে
৮১৬টি আগের প্রকল্প। এডিপিতে সর্বোচ্চ
বাজেট বরাদ্দ পেয়েছে কৃষি, পল্লী উন্নয়ন ও পানিসম্পদ খাত। এ খাতে বরাদ্দের
পরিমাণ ৮ হাজার ১শ’ ৬৭ কোটি টাকা। দ্বিতীয়
সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ, তেল, গ্যাস ও প্রাকৃতিক সম্পদখাতে বরাদ্দের পরিমাণ ৬
হাজার ৭৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। চলতি বছরে
নির্ধারিত ৩০ হাজার ৫০০ কোটি থেকে আগামী বছরের বার্র্ষিক উন্নয়ন বাজেট
বেড়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। আর সংশোধিত এডিপি থেকে বেড়েছে ১০ হাজার কোটি
টাকা। তবে খরচ বাড়ানোর
পাশাপাশি প্রকল্পগুলো মানসম্মত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী
বলেন, ‘প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করলেই নয়, প্রকল্পগুলো যেন মানসম্মত হয় তার
জন্য আমাদের লক্ষ্য রাখত হবে।’ তিনি বলেন,
‘যে সব কাজ বর্ষার সময় করা যাবে না, সেসব কাজ যেন বর্ষার শেষেই শুরু হয়।’